বোরহানউদ্দিনে কেঁচো সার ফিরিয়ে আনছে নিরাপদ সবজি উৎপাদন Latest Update News of Bangladesh

মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৬ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:
আইপিএল নিলামে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের প্রতি আগ্রহ নেই শেবাচিম হাসপাতালে পরিচালকের দায়িত্ব নিলেন ব্রিঃজেঃ একেএম মশিউল মুনীর ‘সংস্কারের পাশাপাশি অবাধ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা জরুরি’ : তারেক রহমান পিরোজপুরে ২৪ বছরেও সম্পন্ন হয়নি আয়রন ব্রিজ নির্মাণ কাজ, জনদূর্ভোগ চরমে বরিশালে তথ্য মেলা: দুর্নীতি প্রতিরোধে জোরালো পদক্ষেপ মমতার বাঁধায় বন্ধ হতে পারে বাংলাদেশে আলু রপ্তানি ! কাউখালী উপজেলা জামায়াত ইসলামীর কমিটি গঠন বিএনপির শোক মিছিলে হামলা: রিমান্ডে হাসানাতপুত্র মঈন আব্দুল্লাহ খুনি হাসিনার পুনর্বাসন, জীবন দিয়ে প্রতিরোধ করবে শহীদ ফাউন্ডেশন: সারজিস আলম নতুন কমিশনের দায়িত্ব ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা: রাষ্ট্রচিন্তা পরিষদ




বোরহানউদ্দিনে কেঁচো সার ফিরিয়ে আনছে নিরাপদ সবজি উৎপাদন

বোরহানউদ্দিনে কেঁচো সার ফিরিয়ে আনছে নিরাপদ সবজি উৎপাদন




ভোলা প্রতিনিধি॥  ভোলার বোরহানউদ্দিনে প্রাকৃতিকভাবে তৈরী কেঁচো সারের(ভার্মি কম্পোস্ট)ব্যবহার ফিরিয়ে আনছে নিরাপদ সবজী উৎপাদন। সবজি চাষে ওই সারের ব্যবহারে সফলতা এবং উৎপাদন প্রক্রিয়া সহজ হওয়ায় দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে কেঁচো সার (ভার্মি কম্পোস্ট)। ভোলার বোরহানউদ্দিনের কৃষকেরা নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে এখন কেঁচো সার ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছেন। এলাকার অনেক নারীও প্রশিক্ষণ নিয়ে কেঁচো সার উৎপাদন করে বিক্রির মাধ্যমে অর্থ রোজগার করছেন। পাশাপাশি সবজী উৎপাদন করে সফলতা পাচ্ছেন। তাঁদের দেখাদেখি অন্য নারীরাও উদ্যোগী হচ্ছেন। উপজেলার সর্ববৃহৎ বড়মানিকা ইউনিয়নের দক্ষিণ বড়মানিকা ও মধ্য বড়মানিকা গ্রাম। শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কের দুইপাশে ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, টমেটোসহ বাহারি শস্য ছড়িয়ে আছে সবখানে। কথা হয় কয়েকজন চাষির সঙ্গে। সবজিখেতের সবুজের জৌলুশের পেছনের গল্পটা জানা হলো তাঁদের কাছ থেকে।

ওই গ্রামের কৃষক রেশাদ আলী জানান, দুৃই বছর ধরে তিনি তাঁর শস্যখেতে রাসায়নিক সার ব্যবহার ছেড়ে দিয়েছেন। নিজে উৎপাদন করা প্রাকৃতিক কেঁচো সার ব্যবহার করছেন। তাঁর মতো এই এলাকায় এমন সার ব্যবহার করা কৃষকের সংখ্যা ১২-১৫ জন। আরেক কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, এই সারের ব্যবহারে সবজি খেতে শস্য উৎপাদন বেড়ে যায়। তা ছাড়া এটি রাসায়নিক সারের বিকল্প হওয়ায় স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে সবজি উৎপাদিত হয়।

দুই বছর ধরে কেঁচো সার উৎপাদন করছেন মধ্য বড়মানিকা গ্রামের সুমাইয়া বেগম, আনোয়ার হোসেন ও দক্ষিণ বড়মানিকা গ্রামের রেশাদ আলী। তারা কেঁচো সার উৎপাদন সম্পর্কে উপজেলা কৃষি অফিসে প্রশিক্ষণ নেন। এরপর কৃষি অফিস থেকে তাঁদেরকে আফ্রিকান প্রজাতির কেঁচো সরবরাহ করা হয়। তারা পঁচা গোবর, আধাপঁচা কচুরিপানা,তরকারির উচ্ছিষ্ট অংশ, জৈব আবর্জনা মিশিয়ে বস্তায় ভরে ১২ থেকে ১৫ দিন রেখে দেন। এরপর এই উপাদানগুলো সিমেন্টের রিং স্লাবে রেখে সেখানে কেঁচো ছাড়া হয়। ২৫-২৮ দিনের মধ্যে উপাদানগুলো কেঁচো সারে পরিণত করে। রেশাদ আলী জানান, তিনি ও তার স্ত্রী ঝুমু আক্তারের উৎপাদিত সার ব্যবহার করে গত আড়াই মাসে ৩৩ শতক জমি থেকে তিনি প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন। পাশের খেতে ২০ শতক জমিতে রেখা চাষ করে ইতিমধ্যে ৪০ হাজার টাকার রেখা বিক্রি করেছেন। উৎপাদিত তরকারির স্বাদ বেশী হওয়ায় ক্রেতারা তার খেত থেকেই সবজী কিনে নিয়ে যান। এছাড়া বংশবিস্তার করা অতিরিক্ত কেঁচো বিক্রি করেও তার প্রায় পাঁচ হাজার টাকা আয় হয়েছে। বর্তমানে তাঁদের উদ্যোগ ও সফলতা দেখে অনেকেই এই সার উৎপাদন শুরু করে দিয়েছেন। কেঁচো সার উৎপাদনে যুক্ত আছেন পাশ্ববর্তী কুতুবা ইউনিয়নের ছোটমানিকা গ্রামের তাছলিমা বেগম,ছাগলা গ্রামের মো. হাবিব, দক্ষিণ কুতুবা গ্রামের শেখ ফরিদ, মো. আনোয়ার, সুলতানা বেগম, আবুল কাশেম সহ আরও অনেক নারী-পুরুষ।

কৃষি অফিসের তথ্যমতে, উর্বর মাটিতে ৫ শতাংশ জৈব পদার্থ থাকার কথা। এতে মাটিতে পানির ধারণক্ষমতা ও বায়ু চলাচলের সুযোগ বাড়ে। কিন্তু দেশের বেশির ভাগ এলাকায় মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ মাত্র ১ শতাংশ। তাই মাটিতে জৈব সারের ব্যবহার বাড়ালে মাটির প্রাকৃতিক উর্বরতা বাড়বে। ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার মাটিকে নরম করে এবং পানি ধারণক্ষমতা বাড়াতে ভূমিকা রাখে। বিভিন্ন অণুজীবের বসবাসের পরিবেশ সৃষ্টি করে। অন্যদিকে রাসায়নিক সার ব্যবহার করলে ক্রমেই ভূমির উর্বরতা কমে যেতে থাকে। উপজেলার বড়মানিকা ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মনির হোসেন বলেন, সবজি উৎপাদনে এই এলাকার কৃষকেরা কয়েক বছর ধরেই কেঁচো সার উৎপাদন ও ব্যবহার করছেন। উৎপাদন খরচ কম ও ফলন বেশী হওয়ায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। একই সঙ্গে জমিতে রাসায়নিকের ব্যবহারও কমছে। প্রতি মাসেই কেঁচো সারের উৎপাদনকারীর সংখ্যা বাড়ছে। উদ্যোক্তাদের মধ্যে অর্ধেকের বেশী নারী। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এই এলাকায় সার উৎপাদনকারীরা কেঁচো উৎপাদন করে বিক্রি করতে পারবেন।

বোরহানউদ্দিন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.ওমর ফারুক বলেন, ‘জাতীয় কৃষি প্রযুক্তি প্রকল্পের (এনএটিপি-২) আওতায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে পরীক্ষামূলকভাবে এই সার উৎপাদন করা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘সারের উৎপাদনের জন্য আমরা আপাতত কেঁচোসহ সব উপকরণ বিনা মূল্যে কৃষকদের দিচ্ছি। বড় পরিসরে কেউ উদ্যোগ নিলেও আমরা তাঁকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD